জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, “জাতীয় পার্টি ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।” তিনি দাবি করেন, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিতে পারলে কিছু রাজনৈতিক দল লাভবান হবে বলে তাদের পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে উপজেলা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, “এই সরকার দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চায়। দেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল না। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই পথে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যে নির্বাচনের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বলতাম, বর্তমান সরকার সেই একই কাজ করছে। একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, যেখানে দেশের অর্ধেক জনগণকে বাদ দিয়ে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা চলছে।”
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বাদ দিতে চাইলে বিচার করে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বাদ দিতে পারেন, কিন্তু বিচার ছাড়া কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা যায় না।”
সরকারের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, “এখন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। শেখ হাসিনাকে বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সমর্থন দিয়েছিল, কিন্তু দেশের মানুষ শেষ পর্যন্ত তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আজ সেই সরকারের পথেই হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার।”
জামায়াতের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তারা বলছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। অর্থাৎ জাতীয় পার্টি থাকলে তারা তৃতীয় শক্তি হতে পারবে না, তাই আমাদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।”
দেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, “আজ দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। ছোটখাটো ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষ বেকার হচ্ছে। মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন হত্যার ঘটনা ঘটছে, নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।”
তিনি আরও দাবি করেন, “দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে। টিসিবির ট্রাকে যত পণ্য থাকে, তার দশগুণ মানুষ সেখানে লাইনে দাঁড়ায়। এটা দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।”
দলের মহাসচিবের মন্তব্য:
আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “দেশে জাতীয় ঐকমত্যের অভাব গভীর বিভাজন তৈরি করছে। বর্তমান সরকার নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের অধীনে নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার নির্দলীয় বা সর্বদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।”