সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ব্যাংককে একীভূতকরণ বা 'রেজল্যুশন' প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ আপাতত বিবেচনার সুযোগ নেই বলে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্পষ্ট করে বলেছে, ক্ষুদ্র শেয়ারহোল্ডারদের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় সরকার চাইলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
নতুন আইনে লোকসানের দায়ভার: বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এফসিডিও-এর কারিগরি সহায়তায় 'ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫' প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নতুন আইনে রেজল্যুশন প্রক্রিয়ায় আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডারসহ পাওনাদারদের অধিকার স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা আছে।
অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারা (যেমন ১৬(২)(ট), ২৮(৫), ৩৭(২)(গ) ও ৩৮(২)) অনুসারে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা রয়েছে রেজল্যুশনের আওতাধীন ব্যাংকের শেয়ারধারক, দায়ী ব্যক্তি, এডিশনাল টিয়ার–১ ও টিয়ার–২ মূলধনধারকদের ওপর লোকসান আরোপ করার।
শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ঋণাত্মক: বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক কনসালটিং ফার্মের এ-কিউ-আর এবং বিশেষ পরিদর্শনে দেখা গেছে উল্লিখিত পাঁচটি ব্যাংকের এনএভি (শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য) ঋণাত্মক অর্থাৎ তারা বিশাল লোকসানে রয়েছে। এসব বিবেচনায় চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংকিং সেক্টর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, সংকটাপন্ন ব্যাংকগুলোর সমগ্র লোকসানের দায়ভার শেয়ারহোল্ডারদের বহন করতে হবে।
ক্ষতিপূরণের শর্ত: তবে, অধ্যাদেশের ধারা ৪০ অনুযায়ী, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান রাখা হয়েছে। এই বিধান বলে যদি রেজল্যুশন প্রক্রিয়ায় শেয়ারহোল্ডাররা অবসায়নের (liquidation) চেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন, তবে সেই অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সুরক্ষার একটি আইনি ভিত্তি তৈরি হলো, যদিও প্রাথমিক লোকসানের দায় তাদেরই বহন করতে হচ্ছে।
ইএফ/