মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালসহ আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগে বলা হয়—চক্রটি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি কর্মীর কাছ থেকে অবৈধভাবে বাড়তি অর্থ আদায় করে প্রায় ৩৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানায়, জনশক্তি রপ্তানির সিন্ডিকেটটির নেতৃত্বে ছিলেন নাফিসা কামাল। তার প্রতিষ্ঠান অরবিটালস ইন্টারন্যাশনালের পাশাপাশি এই প্রতারণায় জড়িত ছিলেন—হাফিযুল বারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান (ইরভিং এন্টারপ্রাইজ), রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী (আমান এন্টারপ্রাইজ), জসিম উদ্দিন আহমেদ (আহাদ ইন্টারন্যাশনাল লি.), মো. আকতার হোসাইন (আক্তার রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি), শিউলী বেগম (মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হোল্ডিংস), কাউসার মৃধা (মৃধা ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন) ও মোহাম্মদ বশির (রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল)।
সরকারের নির্ধারিত জনপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার বিপরীতে তারা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করত, যা আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন। শুধু তাই নয়—পাসপোর্ট, মেডিকেল, কোভিড টেস্ট ও অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এতে করে প্রতি কর্মী থেকে অতিরিক্ত আদায় হয় ১ লাখ ৭ হাজার ৫১০ টাকা।
এমন অনিয়ম ও বিপুল অর্থপাচারের প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে ঢাকার গুলশান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর অধীনে মামলা করেছেন সিআইডি কর্মকর্তারা।
সংস্থাটি জানায়, মামলাটির তদন্ত করছে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। অভিযুক্তদের দেশে থাকা স্থাবর–অস্থাবর সম্পদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। পাশাপাশি তাদের সহযোগীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তে নতুন তথ্য মিলছে এবং পুরো চক্রটিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় সিআইডি।