চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সিইপিজেড)-এর একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন লাগার পর প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা ধরে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে ভবনটি। তীব্র তাপ ও ধোঁয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একপর্যায়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য পিছু হটতে বাধ্য হন। দীর্ঘ লড়াই শেষে রাত ১০টার দিকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আশায় স্বস্তি পেয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

আগুন লাগার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভবনের বিভিন্ন তলায়। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন প্রথমে ভবনের পাঁচ, ছয় ও সাত তলায় লেগেছিল। পরে তা দ্রুত নিচের তলায় ছড়িয়ে পড়ে। একযোগে সব ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর জানান, আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আগুন লাগা কারখানার সিকিউরিটি গার্ড মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি সকালে ডিউটি শেষ করে বাড়ি গিয়েছিলেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে খবর পান কারখানায় আগুন লেগেছে। সন্ধ্যা পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি জানান, সাত তলা বিশিষ্ট ভবনের নিচের তলায় তোয়ালে তৈরি হতো, আর তৃতীয় থেকে সপ্তম তলায় চীনা মালিকানাধীন জি ওয়ান মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ নামে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরির কারখানা রয়েছে। এখানে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার কর্মী কাজ করেন।

আগুনের তীব্রতা ও ধোঁয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা একসময় পিছু হটে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে রাত ৯টার দিকে আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে, আর রাত ১০টার দিকে বৃষ্টি নামে, যা আগুনের তীব্রতা কমাতে সহায়তা করে। বৃষ্টির পর আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

এদিকে, আগুনে ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও অন্যান্য জরুরি বিভাগের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।