কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলন নিহত গৃহবধূর বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে গত ১৪ আগস্ট রাতে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর বালাডোবা গ্রামের স্বামীর বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ঘরের ধরনায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়।

তিনি আরও জানান, মেয়ের স্বামী জীবিকার তাগিদে টাঙ্গাইল জেলায় থাকলেও নিয়মিত পরিবারের খোঁজখবর নিতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতকারী ও মাদকসেবী তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করত। ঘটনার রাতে তার শাশুড়ি ও জা আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। ওই সময় প্রথমে সফিকুল ইসলাম সফি নামে এক যুবক তার বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হয়। এরপর রাত গভীর হলে সফিকুলসহ প্রায় ১২ জন সংঘবদ্ধভাবে মেয়েটির ঘরে প্রবেশ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং নির্মমভাবে হত্যা করে।

নিহত গৃহবধূর বাবা বলেন, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে সত্য গোপন করছে। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার পর বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলুর প্রত্যক্ষ তদবিরে স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহালে গলায় ও শরীরে জখম থাকার পরও আত্মহত্যার কাহিনি সাজায়। এমনকি থানায় মামলা করতে গেলে জোরপূর্বক সাদা কাগজে তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এখনো পর্যন্ত তিনি মেয়ের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাননি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে মেয়ের শাড়ি উদ্ধার করা হলেও লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায়। এ নিয়ে গ্রামে নানা প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও মামলা ও তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই, বরং ভিকটিমের পরিবারকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত গৃহবধূর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে উলিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, বর্তমানে মামলাটি ডিবিতে রয়েছে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আসামি ধরার জন্য।