জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর উত্তরায় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ ২১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও এক মাস সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল-নোমান। তিনি মামলার অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও সময় চান। ট্রাইব্যুনাল তার আবেদন মঞ্জুর করে নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করেন।
মামলার অন্যতম আসামি উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বশির উদ্দিনের পক্ষে তার আইনজীবী জানান, তার হাত ভেঙে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আবেদন করা হয়েছে। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে, তবে ‘হসপিটালাইজড’ হওয়ার সুযোগ নেই।
এ মামলার ২১ আসামির মধ্যে সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ ১২ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন। অন্য আসামিরা হলেন—উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিনুর মিয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, এবং আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহেল রানা ও মো. শাহ আলম। আজ সকালে তাদের সবাইকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। আজও প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় প্রসিকিউশন আবার সময় চেয়ে আবেদন করে, যা মঞ্জুর করা হয়।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় রাজধানীর উত্তরায় ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে অভিযোগ করেছে প্রসিকিউশন। বর্তমানে মামলার ১২ জন আসামি কারাগারে আটক রয়েছেন।