বগুড়ার মাঠ থেকে রাজধানীর বাজারে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সবজির দাম চারগুণ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। ঘন ঘন হাতবদল, চাঁদাবাজি ও দুর্বল বাজার তদারকিই মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বগুড়ার মহাস্থান হাটে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, অথচ ঢাকায় একই বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। শিম ৪০ থেকে বেড়ে ২০০, করলা ৩৫ থেকে ১২০, বরবটি ৩০ থেকে ১০০, পটোল ২৫ থেকে ৮০—প্রতিটি সবজির দামই চারগুণ পর্যন্ত বাড়ছে।
বিক্রেতা ও কৃষকরা বলছেন, বাজারে ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বড় সমস্যা। স্থানীয় হাটে কৃষকরা কম দামে বিক্রি করলেও, পাইকার ও পরিবহন খরচের নামে দাম বাড়িয়ে দেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা রহিম বলেন, “আমরা পাইকারের কাছ থেকে কিনি। পথে কয়েকবার হাতবদল হয়, প্রতিবারই দাম বাড়ে। ফলে আমরা না চাইলে ও খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়াতেই হয়।”
বগুড়ার কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, “বৃষ্টি আর খরচ বেড়ে গেলেও দাম পাই না। সরকার কোনো নজর দেয় না। ফড়িয়ারা সব দখল করে রেখেছে।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোহেল মো. শামসুদ্দিন ফিরোজ বলেন, “কৃষক যেন সরাসরি বাজারে বিক্রি করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি বিপণনকে অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবে শক্তিশালী করতে হবে।”
ভোক্তা সংগঠন “ভোক্তা”র নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, “মধ্যস্বত্বভোগীরা অদৃশ্য সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তাদের লাভের হার ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত।”
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বর্তমান বাজারব্যবস্থা কৃষক ও ভোক্তা—দুজনকেই ঠকাচ্ছে। এখনই এই চক্র ভাঙা না গেলে কৃষির টেকসই ভবিষ্যৎ বিপন্ন হবে।”