ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েম অভিযোগ করেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাইয়ের চেতনা ও স্পিরিট থেকে সরে গেছে। তিনি বলেন, যে আকাঙ্ক্ষা এবং জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, বর্তমান সরকার সেই অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত 'কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচিত প্রতিনিধি সংবর্ধনা-২৫' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

পুরাতন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব: সাদিক কায়েম দাবি করেন, "নতুন বাংলাদেশ গঠনের নামে পুরোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী আবারও প্রভাব বিস্তার করছে," যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জনগণের প্রত্যাশার পরিপন্থী। তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যারা 'মুক্তিযুদ্ধের ইন্ডাস্ট্রি' নিয়ে ব্যবসা করেছিল এবং 'শাহবাগ কায়েমের' মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, নতুন বাংলাদেশে সেই ব্যবসা চলবে না। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "জুলাই চেতনা নিয়ে যারা ব্যবসা করতে চাইবে, সেই ব্যবসাও চলবে না।"

ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রের আহ্বান: ডাকসু ভিপি সবাইকে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগ ও গাজীদের ত্যাগের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। "শহীদরা যে ইনসাফভিত্তিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটিই এখন আমাদের গড়তে হবে।" তিনি ঘোষণা করেন, নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি হবে কল্যাণভিত্তিক ও নৈতিক রাজনীতি। এই দেশে পেশিশক্তির রাজনীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ফাও খাওয়ার রাজনীতি চলবে না।

ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি: সাদিক কায়েম ফ্যাসিবাদের রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চাওয়া গোষ্ঠীকে সতর্ক করে বলেন, "যারা ফ্যাসিবাদের রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চায়, তারা দিল্লির বয়ান দেয়, মুজিববাদী বয়ানে তারা আবার ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়।" তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, তাদের জন্য ফ্যাসিবাদের অতীত পরিণতির থেকেও ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রবীণ রাজনীতিবিদরা জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করছেন না, তাদের মধ্যে দাম্ভিকতা স্পষ্ট। ডাকসু ভিপি বলেন, "এই সরকার শহীদদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাদের প্রথম কাজ ছিল জুলাই শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করা এবং খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনা। কিন্তু দেড় বছরেও তাদের বিরুদ্ধে একটি রায় পর্যন্ত দিতে পারেনি।"

ইএফ/