দূষণ এবং মাছ ধরার জালের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ডলফিনের আবাসস্থল প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। দেশের নদ-নদীতে এখন দুই হাজার ৩০৭টি গাঙ্গেয় ডলফিন রয়েছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন বিভাগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য প্রকাশ করেন।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি (ডব্লিউসিএস) ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৫টি নদীর ৪৫ হাজার ৮৯৩ কিলোমিটার এলাকায় এই জরিপ চালায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিছু নদীতে, বিশেষ করে ঢাকা শহরের চারপাশে প্রবাহিত নদীগুলিতে, তীব্র দূষণের কারণে ডলফিনের সংখ্যা খুবই কম।

জরিপের নেতৃত্বে থাকা ডব্লিউসিএসের কান্ট্রি ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর আলম বলেন বলেন, এই নদীগুলোতে ডলফিনরা মূলত খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা সাকার ফিশ খেয়ে বেঁচে আছে। 

জরিপে ২৫টি হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটির তাৎক্ষণিক সংরক্ষণ প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জরিপ দলটি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বংশী, সুরমা এবং কালনী নদীর ৩০৫ কিলোমিটার জরিপ করেছে, যেখানে তারা ভারী দূষণ সত্ত্বেও মোট ২৭টি গাঙ্গেয় ডলফিন খুঁজে পেয়েছে। বংশীতে সাতটি, তুরাগে পাঁচটি, কালনী ও বুড়িগঙ্গায় তিনটি করে এবং সুরমা নদীতে নয়টি ডলফিন পেয়েছে তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ডলফিন নদীর স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ সূচক এবং তাদের বেঁচে থাকা নদী এবং মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

'যখন নদীর পানি দূষিত হয়, তখন এটি ডলফিন এবং মানুষ উভয়ের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। উভয়ের বেঁচে থাকার জন্য নদী পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'

উপদেষ্টা আরও বলেন, বন বিভাগকে সহায়তা করার জন্য প্রতিটি জেলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক গঠন করা হবে যেন বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। 

তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য কেবল আইন নয়, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তনও প্রয়োজন।