রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে প্রায় একশ শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১০০ শিক্ষক আহত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। অনেকের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে, আবার কিছু শিক্ষক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন কর্মসূচি’ পালনের জন্য অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এতে现场 (সাইটে) বহু শিক্ষক আহত হন।
এর আগে দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে তিন দফা দাবিতে ‘কলম বিসর্জন কর্মসূচি’র ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। পরে শাহবাগের দিকে যাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। অনেক শিক্ষক আশ্রয় নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—
১. সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ,
২. ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত জটিলতার স্থায়ী সমাধান,
৩. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার।
গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম এবং ১৩তম থেকে ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।
এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেক অংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে পৃথকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে।
তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এছাড়া ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।