২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে সম্ভাব্য ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দেশটির শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী পাঠাতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিপুল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী এই ঘাটতি পূরণে একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাপানের নাগোয়া শহরের এক মিলনায়তনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জাপান আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণার্থী ও দক্ষ কর্মী সহযোগিতা সংস্থা (জেআইটিসিও) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনার ও ম্যাচিং ইভেন্টে এই তথ্য জানানো হয়।

বিপুল জনশক্তি ও চাহিদার বিশ্লেষণ: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জাপান ও বাংলাদেশের শ্রমবাজার পরিস্থিতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে বলেন, "২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে, অন্যদিকে বাংলাদেশে বর্তমানে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে। এই প্রবণতা আগামী দুই দশক পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।" এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাপানের শ্রমবাজারের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কর্মী প্রস্তুতকরণে সরকারি পদক্ষেপ: ড. ভূঁইয়া জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী প্রস্তুত করতে বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়াও, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি 'জাপান সেল' গঠন করা হচ্ছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের জন্য সমন্বয় ও যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত কর্মীরা আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে সুনাম অর্জন করেছে। জাপানি ভাষা, সংস্কৃতি ও কাজের মান সম্পর্কে তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এবং জাপানি নিয়োগকারী সংস্থা এই সেমিনারে অংশ নেয়। অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশি ও জাপানি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণের পথকে আরও সুগম করবে।

ইএফ/