সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি যমুনা রেলসেতুর কয়েকটি পিলারে ফাটলের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলো নিয়ে নানা গুজব ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়লেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— এটি আসলে ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমে সৃষ্ট সূক্ষ্ম ‘হেয়ারক্র্যাক’।

রেলসেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মার্ক হ্যাবি শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ৮ থেকে ১০টি পিলারের নিচে সূক্ষ্ম হেয়ারক্র্যাক দেখা গেছে। এগুলো শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত ছোট ফাঁকা, যা সেতুর গঠন বা স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব ফেলবে না।”

তিনি জানান, এসব জায়গায় বিশেষ রেজিন বা আঠা ব্যবহার করে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। “এটি কোনো নির্মাণ ত্রুটি নয়, বরং তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার প্রভাবে স্বাভাবিক কংক্রিট প্রতিক্রিয়া,”— বলেন মার্ক হ্যাবি।

তার ভাষায়, “কিছু ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছবি বড় করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেছে, যা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বাস্তবে এসব ‘হেয়ারক্র্যাক’ ধীরে ধীরে ঘষে ও রেজিন দিয়ে ঠিক করা হচ্ছে।”

প্রকল্প কর্মকর্তারা আরও জানান, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো পুরোপুরি নিরাপদ, ট্রেন চলাচলে কোনো ঝুঁকি নেই।

দেশের দীর্ঘতম এই রেলসেতুটি ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় যমুনা সেতুর প্রায় ৩০০ মিটার উজানে। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান। ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক বিশিষ্ট এ সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ফেব্রুয়ারি থেকেই সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রকৌশলীরা বলছেন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এমন ক্ষুদ্র ফাটল ভবিষ্যতেও সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ইএফ/