মামলায় পলাতক আসামিরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না—এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঢাকার তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, 'আজকে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি আইন পাস ও তিনটি আইনের নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। চূড়ান্তভাবে পাস হয়েছে—বাংলাদেশ শ্রম আইন এমেন্ডমেন্ট অর্ডিন্যান্স এবং আরপিও (রিপ্রেজেন্টেশন অব পিপলস অর্ডার)। নীতিগত অনুমোদিত হয়েছে—সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন।'
তিনি জানান, আলোচনার পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, 'আরপিও সংশোধন করে ইভিএম সংশ্লিষ্ট বিধানগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মামলাতে পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে পারবে না, সেটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'জেলায় যে ইলেকশন অফিসগুলো আছে, সেটা ডিসট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার ঠিক করবেন—বিধান করা হয়েছে। আর যারা ইলেকশন করবেন, দেশি-বিদেশি সোর্স থেকে যত আয় আছে, সম্পত্তি আছে, সমস্ত কিছুর বিবরণ নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে এবং এটা আমরা ওয়েবসাইটে পাবলিক করে দেবো, সবাই জানবে।'
জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, '২০১৪ সালের ভুয়া ইলেকশনের স্মৃতি নিশ্চয় মনে আছে, ১৫৪টা আসনে একজন প্রার্থী ছিল। সাজানো নির্বাচন ছিল। এই ধরনের নির্বাচন যেন না হয়, একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে যারা ভোটার আছেন তারা না ভোট দিতে পারবেন যে, প্রার্থী পছন্দ না। তখন সেখানে আবার নির্বাচন হবে।'
নির্বাচনী জোটের বিষয়ে তিনি বলেন, 'জোটের ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে প্রার্থীকে ইলেকশন করতে হবে, যেন ভোটাররা ক্লিয়ার আইডিয়া পান যে কোন দলের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন।'
নির্বাচন কর্মকর্তাদের ভোটদান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'যারা ইলেকশনের দায়িত্বে থাকবেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিজাইডিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসারসহ যারা নির্বাচনী কাজে থাকবেন, তাদের জন্য আমরা পোস্টাল ব্যালটের বিধান করেছি। প্রবাসীও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন।'
ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতির বিধানও রাখা হয়েছে খসড়ায়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, 'আগে বিধান ছিল কোনো নির্বাচনী এলাকার কোনো ভোটকেন্দ্রে ঝামেলা হলে ওই কেন্দ্রের ফল বাতিল করা হতো। এখন নির্বাচন কমিশন মনে করলে পুরো নির্বাচনী এলাকার ভোট বাতিল করতে পারবে।'
এওয়াই/আবির