জুলাই মাসে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ (৪ নভেম্বর) দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম পেছানোর সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন করে আগামী ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রসিকিউশনের সময় চাওয়ার আবেদনের পর ট্রাইব্যুনাল নতুন তারিখ ঘোষণা করে। প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহিদুল ইসলাম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কিছু আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, সাক্ষী হাজির না হওয়ার বিষয়টি স্পষ্টতই প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা। সাক্ষীদের সময়মতো আদালতে আনতে না পারাটা মামলার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

এর আগেও সাক্ষী হাজির না থাকায় একাধিকবার এই মামলার শুনানি পিছিয়েছে। ১৩ অক্টোবরও সাক্ষী না থাকায় প্রসিকিউশন সময় চেয়েছিল। তখন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম জানিয়েছিলেন, সাক্ষীরা অসুস্থ এবং অন্যান্য প্রসিকিউটররা ট্রাইব্যুনাল-১-এ ব্যস্ত থাকায় শুনানি স্থগিতের আবেদন করা হয়।

ওই সময় ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ করে বলেছিল, আপনারা যদি নিয়মিত সাক্ষী হাজির করতে না পারেন, তাহলে দুটি ট্রাইব্যুনাল রাখারই প্রয়োজন কী? এটা আদালত অবমাননার শামিল।

গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়, যেখানে পুলিশের দুই উপপরিদর্শক এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল জবানবন্দি দেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক, চিকিৎসক, তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ একাধিক সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন, বাকি ২৪ জন পলাতক। তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা শুনানি পরিচালনা করছেন।

২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। ৬২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে একের পর এক সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় মামলার অগ্রগতি শ্লথ হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।