মিষ্টি খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ কমই আছে। তবে অতিরিক্ত চিনি শুধু দাঁতের ক্ষতি বা ওজনই বাড়ায় না পাশাপাশি এটি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি মানসিক ক্লান্তিরও কারণ হতে পারে।
তবে ভালো খবর হল— চিনির পরিমাণ না বাড়িয়েও মিষ্টির স্বাদ উপভোগ করা সম্ভব।
প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর কিছু খাবার আছে, যেগুলো দেবে তৃপ্তি, শক্তি এবং স্বাস্থ্য।
জমাট দই (ফ্রোজেন ইয়োগার্ট)
১০০ গ্রাম সাধারণ ‘ননফ্যাট’ দইয়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। এই দই ঘরেই সহজে জমাট করে নেওয়া যায়।
ফল, সামান্য মধু বা এক চামচ জ্যাম মিশিয়ে ফ্রিজের জমাট বাঁধিয়ে তৈরি হয় স্বাস্থ্যকর দইয়ের আইসক্রিম বা ললিপপ। এটি বরফের মতো ঠাণ্ডা হলেও চিনি কম, আর পেটও ভরে রাখে দীর্ঘক্ষণ। খেজুর
খেজুর এমন এক প্রাকৃতিক মিষ্টি ফল যা মিষ্টির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে।
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে জানানো হয়- একটি মাঝারি আকারের খেজুরে প্রায় ৪.৫ গ্রাম চিনি থাকে। তবে একইসঙ্গে থাকে আঁশ, লৌহ ও শক্তি বৃদ্ধিকারক উপাদান।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এটি রক্তে শর্করার ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে এবং পাচন শক্তিও বাড়ায়।
বিকেলের নাস্তা হিসেবে দুটি খেজুরের সঙ্গে এক চামচ বাদামের মাখন খেলে মিষ্টির তৃপ্তি যেমন মিলবে তেমনি মিলবে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও।
চিয়া পুডিং
চিয়া বীজের পুডিং এখন স্বাস্থ্যসচেতনদের প্রিয় একটি নাস্তা। চিয়া বীজে প্রাকৃতিকভাবে কোনো চিনি নেই। দুধ বা বাদাম দুধে ভিজিয়ে রেখে এটি তৈরি করা যায়।
আর মিষ্টির স্বাদ আনতে চাইলে অল্প পরিমাণে মধু বা ফল যোগ করা যায়। সাথে দারুচিনি মেশালে স্বাদে মিষ্টির অনুভূতি বেড়ে যায়।
এর সঙ্গে যদি ফলের টুকরা, গ্রানোলা বা সামান্য কোকো যোগ করা হয় তাহলে তৈরি হবে খুব কম চিনি-যুক্ত মিষ্টি নাস্তা।
ডালিমের দানা
ডালিম দানা বা বীজ শুধু মিষ্টি নয়, এতে আছে প্রচুর আঁশ, লৌহ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আধা কাপ ডালিম দানায় প্রায় ৯.৫ গ্রাম চিনি থাকে, তবে এর সঙ্গে রয়েছে এমন উপাদান যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
এটি সরাসরি খাওয়া যায় বা দই, ওটস কিংবা বাদাম টোস্টের ওপর ছিটিয়েও দেওয়া যায়। এতে যেমন রং ও স্বাদের বৈচিত্র্য আসবে, তেমনি পুষ্টিগুণও বাড়বে।
ডার্ক চকলেট
চকলেট প্রেমীদের জন্য এটি এক দারুণ বিকল্প। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ডার্ক চকলেট শরীরের মানসিক অবস্থা উন্নত করে, পাশাপাশি এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম ও আঁশ।
সাধারণত এক আউন্স ডার্ক চকলেটে প্রায় ১০ গ্রাম চিনি থাকে।
চাইলে আপেলের টুকরা ডার্ক চকলেটে ডুবিয়ে খাওয়া যায়। এতে মিষ্টি, ফলের আঁশ এবং চকলেটের পুষ্টিগুণ সবই একসঙ্গে মিলবে।
বেইকড আপেল
আপেল এমনিতেই পুষ্টিকর একটি ফল। তবে গরম করে বেইক করলে এটি মিষ্টি ও নরম হয়ে ওঠে, যেন এক টুকরা আপেল পাই!
একটি বড় আপেলে প্রায় ২০ গ্রাম প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
বেইকড আপেল শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগায় এবং পাচন শক্তি বাড়ায়। দারুচিনি বা লবঙ্গের গুঁড়া ছিটিয়ে খেলে স্বাদ আরও বেড়ে যায়, অথচ কোনো বাড়তি চিনি দরকার হয় না।
ভাজা বাদাম
বাদামে প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টির ছোঁয়া থাকে না, তবে হালকা করে ভেজে মধু বা অল্প ম্যাপল সিরাপ দিয়ে মিশিয়ে নিলে তৈরি হয় স্বাস্থ্যকর মিষ্টি নাস্তা।
ঘরে তৈরি ভাজা বাদামে প্রায় ১৫ গ্রাম পর্যন্ত চিনি থাকতে পারে। তাও চাইলে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এতে থাকে ভালো চর্বি, প্রোটিন, ও আঁশ, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং শক্তি জোগায়।
এওয়াই/আবির