সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে হত্যার দুটি পৃথক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেওয়ার দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। সোমবার (১০ নভেম্বর) জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিরিয়ার দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, আইএসের সদস্যরা সাম্প্রতিক কয়েক মাসে প্রেসিডেন্ট আল-শারাকে লক্ষ্য করে একাধিক হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এই হামলা প্রতিরোধের মাধ্যমে তাঁর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, এই ঘটনার পর আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগদানের পথে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে।

১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটির নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকেই আল-শারা নানা নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন। বিশেষত আইএস ও অন্যান্য উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তাঁকে হত্যার টার্গেটে রেখেছে বলে দাবি করা হয়।

দেশটির একাধিক নিরাপত্তা সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্টের একটি পূর্বনির্ধারিত সরকারি অনুষ্ঠানের সময় তাঁকে টার্গেট করে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে আল-শারা হোয়াইট হাউসে এক ঐতিহাসিক বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এই বৈঠককে সিরিয়া–মার্কিন সম্পর্কের নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। দীর্ঘদিন রাশিয়া ও ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত দামেস্ক এখন পশ্চিমা ও আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

গত বছর ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আল-শারা নিজেকে মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছেন। আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, আইএসবিরোধী জোটে সিরিয়ার সম্ভাব্য যোগদান দেশটির পুনর্গঠন, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এখনো নাজুক। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বিচ্ছিন্ন হামলা অব্যাহত রয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট আল-শারার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দামেস্ক এখনো এসব হামলার জন্য দায়ী করছে আইএসকে।