ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে বিশ্বজুড়ে আগ্রহের কমতি নেই। জাতিসংঘের কোনো ফোরামে ইসরায়েলের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিলে আদাজল খেয়ে নেমে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ভেটো, ভয়-ভীতি প্রদর্শন বা অন্য যেকোনো উপায়ে ইসরায়েলের 'স্বার্থ রক্ষা' করে যুক্তরাষ্ট্র।

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে। ইসরায়েলের কথায় কি যুক্তরাষ্ট্রের ওঠাবসা? নেতানিয়াহু কি ট্রাম্পকে নিয়ন্ত্রণ করেন?

তবে মজার বিষয় হল, সাম্প্রতিক সময়ে উল্টো কথা শোনা যাচ্ছে।

'ট্রাম্পের কথায়' গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই দিয়েছেন নেতানিয়াহু—এমন একটি আলাপ বেশ চালু হয়েছে। এমন কী, অদূর ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের ভূমিকা ও কৌশল কেমন হবে, সেটাও নাকি বলে দিচ্ছেন ট্রাম্প নিজেই।

আজ রোববার রয়টার্স ও জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ জানিয়েছেন, ইসরায়েল একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। ইসরায়েলই নির্ধারণ করে তার নিরাপত্তা নীতি কি হবে এবং কোন কোন বিদেশি রাষ্ট্রে সঙ্গে তারা কাজ করবে।

তিনি বলেন, 'গত এক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক নিয়ে কিছু হাস্যকর দাবি শুনছি আমরা। আমি যখন ওয়াশিংটনে গেলাম, তখন বলা হলো আমি মার্কিন প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করি। আমি তাদের নিরাপত্তা নীতিমালা নির্ধারণ করে দেই। এখন বিপরীত দাবি আসছে—মার্কিন প্রশাসন আমাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারাই ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতিমালা নির্ধারণ করে দেয়।'

'এ দু'টোর কোনোটিই সত্য নয়। ইসরায়েল একটি স্বাধীন দেশ; যুক্তরাষ্ট্রও স্বাধীন দেশ। দুই দেশের মধ্যে অংশীদারত্বের সম্পর্ক', যোগ করেন তিনি। 

নেতানিয়াহু বলেন, 'আমরা কারো অনুমোদনের ধার ধারি না। আমরা আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করি। আন্তর্জাতিক বাহিনীর বিষয়ে আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। কারা গ্রহণযোগ্য নয় এবং কারা গ্রহণযোগ্য, সেটা আমরাই ঠিক করবো। এভাবেই আমরা কাজ করি এবং এভাবেই আমরা কাজ করে যাব।'

'অবশ্যই, এই প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও গ্রহণযোগ্য এবং তাদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এমনটাই বলেছেন', যোগ করেনি তিনি।

সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, 'আমরা ইসরায়েলকে মিত্র হিসেবে পাশে চাই। আমরা মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়গুলোতে মার্কিন স্বার্থ কমিয়ে আনতে চাই।'

নেতানিয়াহু বলেন, 'গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা নজিরবিহীন মৈত্রী ও অংশীদারত্ব উপভোগ করেছি। যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে পরিবর্তন এসেছে। সঙ্গে গোটা বিশ্বও বদলে যাচ্ছে।'

'আমরা আমেরিকার সুরক্ষার ওপর নির্ভরশীল নই। ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়গুলোতে ইসরায়েলের কথাই চূড়ান্ত', যোগ করেন তিনি।