যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ বিদেশি কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাইলে এখন থেকে বছরে এক লাখ ডলার ফি দিতে হবে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

এই আদেশে বলা হয়েছে, এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রামে নতুন আবেদন এবং নবায়ন উভয় ক্ষেত্রেই বাড়তি ফি প্রযোজ্য হবে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে। পূর্বে এই ভিসায় বিভিন্ন প্রশাসনিক ফি বাবদ কয়েক হাজার ডলার গুনতে হলেও নতুন আদেশের পর তা কয়েকগুণ বেড়ে গেল।

ওভাল অফিসে ঘোষণার সময় মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “আমেরিকান চাকরি আমেরিকানদের জন্য। বিদেশি কর্মীদের আনার পরিবর্তে আমাদের দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়া তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। বড় কোম্পানিগুলো এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে।”

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, নতুন নিয়মে এইচ-১বি প্রোগ্রামের অপব্যবহার কমবে এবং মার্কিন কর্মীদের জন্য সুযোগ বাড়বে।

তবে প্রযুক্তি খাতসহ বিভিন্ন মহল এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করছে। সমালোচকদের মতে, এত বিপুল পরিমাণ ফি অনেক মেধাবী কর্মীর নাগালের বাইরে থাকবে, ফলে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি প্রতিভা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ তাদের বৈশ্বিক কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যয় বহুগুণ বাড়বে।

একই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও ঘোষণা দেন, নির্দিষ্ট খাতের অভিবাসীদের জন্য নতুন “গোল্ড কার্ড” পদ্ধতি চালু করা হবে। এ ভিসায় আবেদনকারীদের অন্তত ১ মিলিয়ন ডলার ফি দিতে হবে, তবে এর বিনিময়ে দ্রুত অনুমোদন ও বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে।

২০০৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ভিসার জন্য বিপুল আবেদন জমা পড়লেও, ইউএসসিআইএস (মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা) জানিয়েছে, আসন্ন অর্থবছরে আবেদন সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় ৩ লাখ ৫৯ হাজারে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিশ্লেষকদের মতে, নতুন ফি কাঠামোর কারণে এ সংখ্যা আরও কমতে পারে।

এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর দক্ষ কর্মী, বিশেষত আইটি ও টেকনোলজি পেশাজীবীদের ওপর বড় ধাক্কা হয়ে আসবে। অনেকে মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে ইউরোপ, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে দক্ষ কর্মীদের প্রবাহ আরও বেড়ে যেতে পারে।