যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে উড্ডয়নের পরপরই ইউপিএসের একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১১ জন। বুধবার (৫ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে মুহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই ঘটে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার জানান, দুর্ঘটনার সময় বিমানে থাকা তিনজন ক্রুই নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধারকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বোয়িংয়ের সহযোগী ম্যাকডোনেল ডগলাস নির্মিত এমডি-১১ মডেলের ৩৪ বছর পুরোনো বিমানটি ইউপিএসের মালিকানাধীন। এটি লুইসভিল থেকে হাওয়াইয়ের হনোলুলুর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। ইউপিএস জানিয়েছে, বিমানটি ২০০৬ সাল থেকে তাদের বহরে যুক্ত ছিল।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল WLKY-এর সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের একটি ডানায় আগুন ধরে যায়। পরে এটি তীব্র গতিতে নিচে নেমে শিল্পাঞ্চল সংলগ্ন একটি এলাকায় আছড়ে পড়ে এবং ভয়াবহ অগ্নিগোলকে পরিণত হয়। দুর্ঘটনার ধাক্কায় আশপাশের কয়েকটি ভবনেও আগুন ধরে যায়। আকাশজুড়ে ঘন কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে।
মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ইউপিএস ফ্লাইট ২৯৭৬ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। মাত্র কয়েক মিনিট পরই রাডার থেকে এর সিগন্যাল হারিয়ে যায়।
এক তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগে বিমানের কোনো ইঞ্জিন আলাদা হয়ে পড়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে ধাতব টুকরো ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে, যা ইঞ্জিন বিস্ফোরণের ইঙ্গিত দিতে পারে।
লুইসভিলের মেয়র ক্রেইগ গ্রিনবার্গ বলেন, এখনও এলাকাটিতে আগুন জ্বলছে। স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য বিমানবন্দরের পাঁচ মাইলের মধ্যে সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
বোয়িং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইউপিএস ও তদন্ত সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় হাত বাড়াবে।
ঘটনার পর লুইসভিল বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এতে ইউপিএসের পণ্য পরিবহনসহ অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগের সরবরাহ কার্যক্রমেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।