বৈশ্বিক অর্থনীতির টালমাটাল পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিমুক্ত সম্পদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তার ফলেই ইতিহাসে প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করেছে।

বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারে অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি শাটডাউন এবং ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে আবারও সোনার দিকে ঝুঁকছেন। বুধবার এশিয়ার বাজারে স্পট গোল্ডের মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৩৬ ডলারে—যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সরকারের অচলাবস্থা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে। এ অবস্থায় সোনাই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিকল্প। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ওসিবিসি ব্যাংকের ক্রিস্টোফার ওং বলেন, “শাটডাউনের প্রভাব স্পষ্টভাবে সোনার দামে প্রতিফলিত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আগের শাটডাউনেও সোনার দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছিল।”

অন্যদিকে ইউওবি ব্যাংকের হেং কুন হাউ মনে করেন, “ডলারের দুর্বলতা এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ সোনার দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।”

বিশ্ব স্বর্ণ পরিষদের তথ্যমতে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনানির্ভর ইটিএফ-এ রেকর্ড ৬৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কৌশলগত সোনা কেনাও দামের উত্থানে বড় কারণ—২০২২ সালের পর থেকে তারা প্রতিবছর ১ হাজার টনেরও বেশি সোনা কিনছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি মার্কিন শাটডাউন দ্রুত শেষ হয়, তবে স্বল্পমেয়াদে দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সোনার মূল্যবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই তাদের ধারণা।