গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস আরও এক ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে হস্তান্তর করেছে। এই নিয়ে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে হামাস মোট ২০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ২২ জন বন্দির মরদেহ ইসরায়েলের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও এক বন্দির মরদেহ রেডক্রসের কাছে তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বুধবার হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে জানায়, মরদেহটি গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় এবং পরে তা হস্তান্তর করা হয়।
চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী, ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া, প্রত্যেক বন্দির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েলকে ১৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা।
তবে মরদেহ শনাক্ত ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরুর আগে সকল বন্দির মরদেহ ফেরত দেওয়া অপরিহার্য। হামাসের বক্তব্য, গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে মরদেহ শনাক্ত ও উদ্ধারে সময় লাগছে।
অন্যদিকে, গাজার কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অভিযোগ করেছে যে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির আওতায় যেসব ফিলিস্তিনির মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই বিকৃত বা নির্যাতনের চিহ্নযুক্ত ছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৮৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ। মানবিক এই সংকটের মধ্যে বন্দী ও মরদেহ বিনিময় কিছুটা স্বস্তি আনলেও, গাজায় যুদ্ধ থামেনি।
ইএফ/