বলিউডের প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা গোবর্ধন আসরানি প্রয়াত হয়েছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ৮৪ বছর বয়সে সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মুম্বাইতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সান্তাক্রুজ শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
১৯৪১ সালের ১ জানুয়ারি রাজস্থানের জয়পুরে জন্ম গোবর্ধন আসরানির। ছোটবেলা থেকেই নাটক ও অভিনয়ের প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তাঁর। পড়াশোনা শেষ করে অল ইন্ডিয়া রেডিও-তে ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে সাহিত্যের শিক্ষক কলাভাই ঠাক্কার থেকে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ১৯৬২ সালে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমিয়ে বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেন।
পরিচালক হৃষিকেশ মুখার্জি-এর পরামর্শে তিনি ভর্তি হন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (FTII)-তে। ১৯৬৬ সালে সেখান থেকে উত্তীর্ণ হন। তবে প্রথম দিকে বড় সুযোগ খুব একটা পাননি। ‘হাম কহাঁ জো রহে হ্যায়’, ‘হরে কাঁচ কি চুড়িয়াঁ’, ‘উমং’ ও ‘সত্যকাম’-এ ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন, কিন্তু আলোচনায় আসেননি। জীবিকা নির্বাহের জন্য FTII-তে শিক্ষকতা শুরু করেন, যা পরবর্তীতে জীবনের বড় টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়।
গুলজারের সুপারিশে হৃষিকেশ মুখার্জি তাঁকে ডাকেন ‘গুড্ডি’ (১৯৭১)-এর জন্য। ছবিতে অভিনয় করে আসরানি দর্শকদের মন জয় করেন। এরপর ‘বাবার্চি’, ‘নমক হারাম’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘অভিমান’, ‘চলা মুরারি হিরো বননে’, ‘পতি পত্নী ঔর ওহ’, ‘খুন পসিনা’, ‘আমদাবাদ নো রিকশাওয়ালো’সহ অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের হাসিয়েছেন ও মুগ্ধ করেছেন।
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র ছিল ‘শোলে’ ছবির জেলারের হাস্যকর ভূমিকায়। সংলাপ, মুখভঙ্গি ও টাইমিং সব মিলিয়ে গড়ে তোলা এই চরিত্র আজও ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অমর।
অভিনয়ের পাশাপাশি আসরানি ছয়টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। শেষবার তাঁকে পর্দায় দেখা গিয়েছিল ২০০৩ সালের কমেডি ছবি ‘নন স্টপ ধামাল’-এ। জীবনের সাফল্যের পেছনে ছিলেন স্ত্রী ও অভিনেত্রী মঞ্জু আসরানি।
এক যুগের হাসির নায়ক, বলিউডের প্রিয় মুখ আসরানির প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগৎ হারাল এক অনন্য প্রতিভাকে।