সময় থেমে থাকে না, কিন্তু কিছু কাপড়, কিছু গন্ধ, কিছু স্মৃতি সময়কে আটকে রাখতে জানে। যেমনটি জানে একটি পুরোনো শাড়ি—যেটি একদিন ছিল মায়ের বিয়ের সাজ, আজ তা রূপ নিল মেয়ের ভালোবাসার প্রতীক হয়ে।
এই ভালোবাসার গল্পই বলেছেন দুই বাংলার নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান, মায়ের বিয়ের শাড়ি পরে শেয়ার করা এক আবেগঘন ছবিতে।

বুধবার সকালে নিজের সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি পোস্ট করে জয়া জানান, শাড়িগুলো তার মায়ের বিয়ের ও বউভাতের। বয়স প্রায় ৪৫ বছর। নীল ও কমলা রঙের সেই শাড়িতে সোনালি জরির ছোঁয়া, রাজকীয় এক আবহ—যেন ইতিহাসের গায়ে লেখা এক কাব্য।

তার শরীরের অলঙ্কার, মুখের নরম মেকআপ, আর চোখের গভীরতা—সবই যেন সময়ের পেছনে ফেলে আসা এক মেয়ের স্মৃতিচারণ, যে একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের শাড়ি গায়ে জড়াতো, আর ভাবতো—"একদিন আমিও মা হবো।"

জয়া তার পোস্টে লেখেন: এই দুটি শাড়ি নিয়ে সেই শিশুকালেই বেলা থেকে বেনো হয়ে মায়ের আলমারি ঘেঁটে বের করতাম। মায়ের চোখ এড়িয়ে চুপি চুপি গায়ে জড়িয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতাম... তখন ভাবতাম, আমিও একদিন মা হবো, আমারও এমন একটা শাড়ি থাকবে।

আরও লেখেন: আমার মায়ের শাড়ি, তার পরিশ্রম, ত্যাগ আর ভালোবাসার প্রতীক হয়ে আছে। মা, তোমার বিয়ের শাড়ি, বউভাতের শাড়ি, এই দুটি আমার কাছে অমূল্য সম্পদ।”

এই পোস্ট যেন শুধুই একটি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট নয়, বরং এক নারীর ভেতরের নরম আবেগের নীরব ভাষ্য। একজন অভিনেত্রী হয়েও, জয়া যেন হয়ে উঠলেন একজন কন্যা—একজন স্মৃতিকাতর মানুষ।

জয়া আহসানকে আমরা নানা লুকে দেখি—ফুলেল শাড়ি, জমকালো গাউন, সাবলীল ক্যাজুয়াল লুক। কিন্তু এই শাড়িগুলো যেন কেবল পোশাক নয়, বরং সময়ের গায়ে লেখা গল্প। ফ্যাশন সচেতনতা নয়, এটি ছিল স্মৃতি ধরে রাখার এক অনন্য প্রয়াস।

জয়ার পোস্টের নিচে ভক্তদের প্রতিক্রিয়াও ছিল তেমনই। কেউ লিখেছেন, "রুচির সংজ্ঞা বদলে দিলেন," কেউ বললেন, "এমন আন্তরিকতা আজকাল খুব কমই দেখি।" আর কেউ শুধু লিখেছেন—"মা।"

জয়া আহসানের এই প্রকাশ সত্যিই দেখিয়ে দিল, একজন তারকা শুধু আলোয় নয়, ছায়ার গল্পেও সমানভাবে উজ্জ্বল হতে পারেন। মায়ের বিয়ের শাড়ি পরে তার এই ছবি হয়ে রইলো সময়ের কাছে এক স্থিরচিত্র, যেখানে অভিনয় নেই, কেবল অনুভব আছে।