টাকার বিপরীতে আবারও বেড়েছে মার্কিন ডলারের মূল্য। বুধবার (২২ অক্টোবর) দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলারের বিক্রয়মূল্য উঠে এসেছে সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ৭৫ পয়সায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা। সামান্য এই বৃদ্ধিও আমদানি নির্ভর বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি আমদানি এলসি খোলার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণেই বাজারে ডলারের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে বুধবার এক ডলার বিক্রি হয়েছে ১২২ টাকা ৭৫ পয়সায় এবং ক্রয় করা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সায়। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে বিক্রয়মূল্য ছিল ১২২ টাকা ৬০ পয়সা ও ক্রয়মূল্য ১২১ টাকা ৬০ পয়সা। অন্যদিকে, ঢাকা ব্যাংকে এক ডলার বিক্রি হয়েছে ১২২ টাকা ৫০ পয়সায় এবং ক্রয় হয়েছে ১২১ টাকা ১৫ পয়সায়— যা গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, আন্তঃব্যাংক বাজারে বুধবার ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১২২ টাকা এবং ২০ অক্টোবর ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে। আগের মাস আগস্টে এলসি খোলা হয়েছিল ৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের, অর্থাৎ মাসিক ভিত্তিতে এলসি খুলে আমদানি বাড়ছে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার হারে।
এর ফলে ব্যাংকগুলোর ওপর ডলারের চাহিদা বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৮০ পয়সা দরে মোট ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে মোট ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার কিনেছে।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, "আমদানির চাপ কিছুটা বেড়েছে, সে কারণে ডলারের দামও সামান্য বেড়েছে। তবে এটি অস্বাভাবিক নয়। বাজারে ডলারের সরবরাহ এখনও পর্যাপ্ত রয়েছে।"
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এলসি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো এবং রপ্তানি আয় ত্বরান্বিত করা ছাড়া বাজারে ডলারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।