চিৎকার-চেঁচামেচি আর দরদামের হইচই। দেশি-বিদেশি নানান জাতের মাছে জমজমাট বাজার। তবে দেখা নেই মাছের রাজা ইলিশের। ধরা-বেচা বন্ধ থাকায় রুপালি ইলিশের বদলে রুই-কাতল, তেলাপিয়া-পাঙাশে পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতা মনির হোসেন। বরাবরের মতোই ক্রেতাদের কাছে টানছেন তিনি। শুধু মনিরই নন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানছেন অন্যান্য ইলিশ বিক্রেতারাও।

শনিবার (০৪ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুরের কচুক্ষেত, গুলশান, কালাচাঁদপুরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিতে ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে টানা ২২ দিন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ নিষেধাজ্ঞা। আর এ সময়ে দেশের সব নদী-সমুদ্রে ইলিশ ধরা, বেচাকেনা কিংবা মজুত-বাজারজাতকরণে পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

সরেজমিন কারওয়ান বাজারে গিয়ে নানান জাতের মাছ চোখে পড়লেও ইলিশের দেখা মেলেনি। জানতে চাইলে সরকারের নিষেধাজ্ঞার কথা জানালেন খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কথা হয় মাছ বিক্রেতা সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিশ মাছ এখন ডিম দেবে। এজন্য বাজারে বিক্রি বন্ধ রয়েছে। সরকারি নিয়ম-কানুন মেনেই বাজারে ইলিশ তোলা হয়নি। যতদিন বেচাকেনা বা ধরা বন্ধ থাকবে ততদিন আমরা এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবো।

ব্যবসায়ী স্বপন দাস বলেন, প্রতি বছরের এ সময়টায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। আমরাও তা মেনে চলার চেষ্টা করি। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থাও বাজার তদারকি করে। ফলে অনেকে চাইলেও মজুতকৃত ইলিশ বিক্রি করতে পারেন না। কেননা কারও কাছে ইলিশ পেলে আইন অনুযায়ী শাস্তি হয়। এজন্য ইলিশ বিক্রি করে শাস্তি পেতে আমরা রাজি নই। তবে নিষেধাজ্ঞা সবারই মেনে চলা উচিত। কারণ এ ২২ দিনে ইলিশ ছাড়বে মা ইলিশ। এতে স্বাভাবিকভাবেই প্রজনন বাড়ে।

গুলশানের কালাচাঁদপুরের ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, ৩ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ বিক্রির সময় ছিল। তবে আমাদের ১০টার মধ্যেই সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়। তবে ২২ দিন ইলিশ ধরা ও বেচা বন্ধ থাকায় আমি রুই-কাতল, চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ নিয়ে এসেছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আবারও ইলিশ বিক্রি শুরু করব।

এদিকে, ইলিশ ধরার ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মাঠে তৎপর রয়েছে প্রশাসন। সমুদ্র-নদীকেন্দ্রিক জেলা-উপজেলায় নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে অভিযান চালাচ্ছে মৎস্য বিভাগ। এ দিন কারওয়ান বাজারেও যথারীতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চালানো হয়েছে অভিযান।

এছাড়া সভা, সমাবেশ, লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে প্রচার চালিয়ে এই অভিযান সফল করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।