মন্দ ও ক্ষতিজনক শ্রেণির খেলাপি ঋণ অবলোপনে সময়সীমা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৮ ফেব্রুয়ারির পূর্বের নীতিমালা সংশোধন করে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে।

পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী, টানা দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক অবস্থায় থাকা ঋণ অবলোপনযোগ্য ছিল। তবে সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, এখন থেকে যেসব ঋণ মন্দ ও ক্ষতিজনক অবস্থায় রয়েছে এবং ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা নেই, সেসব ঋণ অবলোপন করা যাবে। এতে পুরোনো ঋণগুলোকে কালানুক্রমিকভাবে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নতুন নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, অবলোপনের অন্তত ৩০ কর্মদিবস আগে ঋণগ্রহীতাকে লিখিত নোটিশ দিতে হবে। কারণ, অবলোপনের পরও ঋণগ্রহীতা দায়মুক্ত হবেন না; সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত তিনি খেলাপি হিসেবেই বিবেচিত থাকবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ঋণ অবলোপনের আগে বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির সব প্রচেষ্টা নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে। তবে অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩–এর আওতায় মামলাযোগ্য না হলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ এবং মৃত ঋণগ্রহীতার নামে থাকা যে কোনো অঙ্কের ঋণ মামলা ছাড়াই অবলোপন করা যাবে।

এ ছাড়া, মৃত ঋণগ্রহীতার নামে বা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ব্যাংক নিজ বিবেচনায় অবলোপন করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে উত্তরসূরির আয়ক্ষমতা বিবেচনা করতে হবে। একই সঙ্গে অবলোপিত ঋণ আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য নগদ প্রণোদনার সুযোগও রাখা হয়েছে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে কার্যকর করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বর্তমানে ব্যাংক খাতে ডলার সংকট অনেকটা কেটে গেছে, রিজার্ভ বেড়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মন্দ ঋণ অবলোপনে শিথিলতা ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক পরিচালনাকে আরও কার্যকর করবে।”

ইএফ/