নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বছরের পর বছর ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে যায়, সৃষ্টি হয় কাদা ও গর্তের। এতে শিক্ষার্থী, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।

সড়কটি ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের দড়িকান্দী বাসস্ট্যান্ড থেকে অলিপুরা সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি আশপাশের অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষের একমাত্র যাতায়াতপথ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বহু বছর ধরে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মগবাজার, বালুয়াকান্দি, নাজিরপুর, নীলকান্দা ও বালুয়াকান্দি এলাকায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষাকালে এসব গর্তে পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের মতো হয়ে যায়। ফলে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন পার হতে হচ্ছে পথচারীদের।

স্থানীয় সবজি বিক্রেতা সোহেল মিয়া বলেন,চোখের সামনে অন্তত ৩০টা দুর্ঘটনা দেখছি। কারো হাত ভেঙেছে, কারো মালামাল নষ্ট হয়েছে। বড় কোনো সরকারি লোক এলেই সাময়িকভাবে ইট-বালু ফেলে সমান করে দেয়, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার বলেন,প্রতিদিন এই ভাঙা রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। রাস্তায় পানি জমে থাকে, কাদা-মাটিতে হাঁটা যায় না। পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় নষ্ট হয়। আমরা চাই দ্রুত এই রাস্তা মেরামত করা হোক।”
নীলকান্দা নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক বলেন,এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিশু স্কুলে আসে। কাদা ও পানি জমে থাকায় প্রায়ই তারা পড়ে গিয়ে আহত হয়। এতে শিক্ষার পরিবেশও ব্যাহত হচ্ছে।
অটোরিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,এই রাস্তায় গাড়ি চালানো এখন যুদ্ধের মতো। প্রায়ই গাড়ি গর্তে আটকে যায়, যাত্রী নামিয়ে ঠেলে তুলতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তা অচল হয়ে পড়ে।
বিকল্প রাস্তা না থাকায় এই সড়ক দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে অ্যাম্বুলেন্স, সিএনজি, রিকশা, লেগুনা, নসিমন, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ট্রাক। সড়কের পাশে রয়েছে একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান, দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক, চারটি মসজিদ, কয়েকটি মাদরাসা, একটি হাইস্কুল, একটি ইউনিয়ন পরিষদ ও চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিদিন অন্তত অর্ধলাখ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সনমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল হক টিক্কা বলেন,আমরা বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি এবং কয়েকবার নিজের উদ্যোগে সাময়িক সংস্কার করেছি। কিন্তু টেকসই সমাধানের জন্য প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগ প্রয়োজন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী জানান,বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলীর (এক্সইএন) দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সড়কটির সংস্কারের দায়িত্ব তাদের অফিসের অধীনে।