রাজশাহী শহরের যানজট সমস্যা সমাধানে দূরপাল্লার বাসগুলোকে নওদাপাড়া নতুন বাস টার্মিনালে স্থানান্তরের উদ্যোগ জোরদার করা হয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় টার্মিনালটি পরিদর্শন করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

তার সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান এসএম তুহিনুর আলম, আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) নাজমুল হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. নূর আলম সিদ্দিকী, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হেলাল এবং রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম পাখি।

পরিদর্শন শেষে পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, “রাজশাহীতে প্রতিদিন শত শত দূরপাল্লার বাস শহরে প্রবেশ করে, ফলে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত এক বছর ধরেই আমরা চেষ্টা করছি যাতে এসব বাস নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকেই যাত্রী ওঠানামা করে।”

তিনি আরও বলেন, “দূরপাল্লার বাস কাউন্টার শহরের যেকোনো জায়গায় থাকতে পারে, তবে যাত্রী ওঠানামা অবশ্যই নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকে করতে হবে। ঢাকা শহরের মতো, যেখানে নির্দিষ্ট টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ে—রাজশাহীতেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।”

আরএমপি কমিশনার জানান, এ বিষয়ে একাধিকবার পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে, কিন্তু তারা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। তবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “এই শহরের যানজট নিরসনের স্বার্থে সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।”

এ সময় রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান এসএম তুহিনুর আলম জানান, নওদাপাড়া টার্মিনাল আধুনিকীকরণে একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, “টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে আমরা কাজ করছি। যাত্রী বিশ্রামাগার, শৌচাগার, নতুন কাউন্টারসহ সব ধরনের সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি টার্মিনালের সামনে থাকা অবৈধ দোকানগুলোও ধীরে ধীরে সরিয়ে ফেলা হবে।”

আরডিএ চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমরা পরিবহন মালিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। তারা মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন। আমরা চাই, খুব শিগগিরই দূরপাল্লার সব বাস এখান থেকেই চলাচল শুরু করুক।”

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হেলাল বলেন, “সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে যাত্রীদের সুবিধার জন্য নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল নির্মাণ করেছে। কিন্তু টার্মিনালের সামনের অবৈধ দোকানগুলো যানবাহনের চলাচলে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। এসব অপসারণ না করলে কার্যকরভাবে টার্মিনাল ব্যবহার সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, “টার্মিনালে যাত্রীদের বসার জায়গা, চলাচলের সুব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শৌচাগার এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। এসব সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে আমরা আমাদের সব কাউন্টার এখানেই স্থানান্তর করব।”

রাজশাহী নগরকে পরিকল্পিত ও যানজটমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় পরিদর্শনকালে।