সিলেটে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি রোধে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের যাত্রীদের টিকিট যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।

প্রথম দিনেই টিকিট ছাড়া ভ্রমণের দায়ে কয়েকজন যাত্রীকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযানে অংশ নেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলি রানী দেব।

এদিন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের মূল ফটকে টিকিট যাচাইয়ের পাশাপাশি পেছনের তিনটি গেইট খোলা রাখা হয়। এই সুযোগে কালোবাজারিদের কাছ থেকে কেনা টিকিটধারী ও বিনা টিকিটের যাত্রীরা সহজেই ট্রেনে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, ট্রেনের পেছনের বগিতে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মচারী ও রেলওয়ে পুলিশের যোগসাজশে বিনা টিকিটে যাত্রী উঠানো হয়।

অভিযানের সময় সাংবাদিকদের সামনে হাতেনাতে ধরা পড়েন রেলওয়ের কর্মচারী মিজানুর রহমান। তিনি ৬০০ টাকায় এক সাংবাদিককে বিনা টিকিটে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন এবং ট্রেনে তুলেও দেন। পরে সাংবাদিক পরিচয় প্রকাশের পর তিনি অস্বীকার করে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় রেলওয়ে পুলিশের সদস্য কাদির তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। তাকেও বিনা টিকিটে যাত্রী তুলতে দেখা যায়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সিলেট স্টেশনে দীর্ঘদিন ধরেই একটি শক্তিশালী টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেট সক্রিয়। এ চক্রে জড়িত রয়েছে কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারী, রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। আজকের অভিযানে মূল ফটকে চেকপোস্ট থাকলেও কালোবাজারিরা পেছনের গেইট ব্যবহার করে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠাতে সক্ষম হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলি রানী দেব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিহাব সারার অভি, রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, রেল কর্মকর্তা, র‍্যাব, রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলি রানী দেব বলেন, “প্রথম দিনে টিকিট ছাড়া কয়েকজন যাত্রীকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। স্টেশনের পশ্চিম পাশ অরক্ষিত থাকার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”