একাধিক অভিযোগ ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ ফয়সাল আহমেদকে মেহেরপুরে বদলি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে মেহেরপুর সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে পদায়ন করা হয়। প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আব্দুল হামিদ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “এই আদেশ জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে। বদলিকৃত কর্মকর্তাকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্বভার হস্তান্তর না করলে ষষ্ঠ দিন থেকে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য করা হবে। পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগ না দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ডা. ফয়সালের বিরুদ্ধে দীর্ঘ অনুপস্থিতি, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সিভিল সার্জনের সঙ্গে অসদাচরণ এবং বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সদর হাসপাতালের বায়োমেট্রিক হাজিরা রেকর্ড অনুযায়ী, গত তিন মাসে তিনি ৫০ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবদুস সালামের সঙ্গে তীব্র বাগবিতণ্ডায় জড়ান তিনি। এ ঘটনায় ৫ অক্টোবর সিভিল সার্জন মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

পরদিন ৬ অক্টোবর ডা. ফয়সালের পক্ষের কিছু স্বেচ্ছাসেবক সদর হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন আয়োজন করে, যা নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

এর আগে, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর, সাতক্ষীরার কাটিয়া আমতলায় ডা. ফয়সালের চেম্বারে এক নারী রোগীকে কান ধরে ওঠবস করানো এবং মারধরের অভিযোগ উঠে। সিরিয়াল না মেনে চিকিৎসা নিতে আসায় ওই নারীকে জুতা দিয়ে পেটান তিনি। মাকে রক্ষা করতে আসা মেয়েকেও তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ উঠে।

ভুক্তভোগী বিউটি বেগম ও তার মেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনাটিও স্থানীয়ভাবে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে।

সবশেষ একের পর এক অভিযোগ ও অনিয়মে জড়ানোর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবশেষে ব্যবস্থা নেয়। জনস্বার্থে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে সরিয়ে মেহেরপুরে বদলি করা হলো।