কক্সবাজারের টেকনাফে মানবপাচারকারীদের একটি আস্তানা থেকে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ২২ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। সোমবার (২৭ অক্টোবর) ভোররাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকার করাচিপাড়া সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি ও ২১ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৪ নারী এবং ৭ শিশু।
র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (ল অ্যান্ড মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার আ.ম ফারুক জানান, নৌপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে কিছু মানুষকে পাহাড়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি টিম রাতেই পাহাড় ঘিরে অভিযান চালায়। তবে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি কিশোর মোবারক হোসেন (১৭) জানান, গত মঙ্গলবার কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকা থেকে তাকে জোর করে সিএনজিতে তুলে পাহাড়ে নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। সেখানে মারধর করে তার পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তার সাথে থাকা রোহিঙ্গা ভুক্তভোগীদেরও একইভাবে মুক্তিপণ অথবা মালয়েশিয়া পাচারের হুমকি দেওয়া হতো।
অভিযানের পরে র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী এবং নিজেদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাচারকারী চক্রের মূল সদস্যদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে উদ্ধার ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আইনি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা।
টেকনাফ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই মানবপাচারকারীরা সক্রিয়। সীমান্তবর্তী এই এলাকার পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি ও নৌপথকে কাজে লাগিয়ে প্রায়ই রোহিঙ্গা ও স্থানীয় দরিদ্র মানুষদের চাঁদাবাজি করে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয় দালালরা। র্যাবের দাবি—মানবপাচার রোধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।