সিরাজগঞ্জের আলোচিত ভিক্ষুক সালেহা বেগম (৬৫) আর নেই। অসুস্থতার সাথে লড়াই করতে করতে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন এই হতদরিদ্র নারী। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয় মানুষ তাকে ‘সালে পাগলী’ নামে ডাকতেন।

শনিবার সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ শহরের কান্দাপাড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পরিবারের কেউ না থাকায় ভিক্ষা করেই চলত সালেহার জীবন। শারীরিক অসুস্থতা বাড়তে থাকায় প্রথমে তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার লিভারে ক্যান্সার ধরা পড়ে। কিন্তু সামর্থ্যের অভাব ও বয়সের ভারে চিকিৎসা বেশি দিন এগোয়নি।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. শাহরিয়ার শিপু জানান,
“দীর্ঘদিন ধরেই সালেহা অসুস্থ ছিলেন। গতকাল তিনি মারা গেছেন। আজ নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। তার রেখে যাওয়া টাকার বিষয়ে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

সম্প্রতি সালেহা বেগম আকস্মিক আলোচনায় আসেন। মাছুমপুর নতুনপাড়ায় তার ঝুপড়ি ঘর থেকে দুই দিনের ব্যবধানে তিন বস্তা টাকা উদ্ধার করে এলাকাবাসী। টাকাগুলোর মাঝে অনেক পুরোনো নোট থাকলেও ব্যবহারযোগ্য হিসেবে গণনা করা হয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৯ টাকা। এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন—যে নারী প্রতিদিন ভিক্ষা করে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করতেন, তার চিকিৎসার জন্য কেন এগিয়ে এল না কেউ? সমাজের অবহেলা আর অসহায়ের জীবন যন্ত্রণাই যেন তার নীরব সঙ্গী ছিল।