নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মির্জাপুরদীঘা গ্রামের জরিনা বেগম (৬৫) জীবনের শেষ প্রহরেও লড়ে যাচ্ছিলেন টিকে থাকার সংগ্রামে। অভাবের মধ্যেও স্বপ্ন ছিল নিজের পরিশ্রমে সংসারটাকে টিকিয়ে রাখা। কিন্তু গত ২৭ অক্টোবর রাতের অন্ধকারে চুরি হয়ে গেছে তার শেষ ভরসা দুটি গরু।
ঋণ নিয়ে কেনা সেই গরুগুলোই ছিল তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। প্রতিদিন গাভির দুধ বিক্রি করে চলতো সংসার, শোধ হচ্ছিল এনজিওর কিস্তিও। কিন্তু এক রাতে সবকিছু বদলে যায়।
জরিনার স্বামী আবর সরদার (৭৩) বহু বছর ধরে শারীরিক প্রতিবন্ধী, কাজ করার সামর্থ্য নেই। এক ছেলে ও তিন মেয়ে বিয়ের পর আলাদা সংসারে ব্যস্ত। তাই নিজেই এনজিও থেকে টাকা ধার করে একটি গাভি কেনেন জরিনা। কিছুদিনের মধ্যেই সেই গাভি বাছুর দেয়, আর সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন আশার গল্প যা শেষ হয়ে গেল এক চুরির ঘটনায়।
জরিনা বলেন, রাতে হঠাৎ শব্দ শুনে উঠেছিলাম। বাইরে দুজন ছায়ামূর্তি দেখেছিলাম। ভেবেছিলাম চোর না, তাই আবার ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে দেখি গোয়ালঘর ফাঁকা গরু দুইটা নাই।
চোখ মুছে তিনি আরও বলেন, ওই দুইটা গরুই ছিল আমার ভরসা। এখন সংসার চলবে কেমন করে, কিস্তি দেব কীভাবে?
প্রতিবেশী আশিকুর রহমান জানান, গরু বিক্রির টাকাতেই তাদের জীবিকা চলত। এখন পরিবারটি পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেছে।
বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করা হবে।
নলডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কাউকে শনাক্ত করা না গেলেও পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।