সৈয়দপুর শহর ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ২০০টি ছোট-বড় কারখানা গড়ে উঠেছে শহরজুড়ে। এখানে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করে আনা হয় পরিত্যক্ত লোহা, যেগুলো পুনরায় ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে কৃষি ও পরিবহন খাতে ব্যবহৃত নানা ধরনের যন্ত্রাংশ। এর মধ্যে রয়েছে:
রেলকোচের দরজা-জানালা , হোস পাইপ, কাপলিং, বেয়ারিং কভার, কানেক্টিং রড, ইঞ্জিনের ঢাকনা, মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ, কৃষি যন্ত্রপাতি
এই শিল্পে পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক এখন সরাসরি যুক্ত। কেউ কেউ কাজ শিখে গড়েছেন নিজস্ব কারখানাও।
শ্রমিক আলামিন ইসলাম বলেন,
"আগে ঢাকায় কাজ করতাম। এখন বাড়িতে থেকে কাজ করছি। ভালো আয় হচ্ছে, সংসারও চলে ভালোভাবে।"
২০ বছর ধরে এই পেশায় থাকা কুদ্দুস আলী বলেন,
"সৈয়দপুরে প্রায় সব ধরনের যন্ত্রাংশই এখন তৈরি হয়।"
নাঈম ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক নাঈম খান বলেন,
"বাইরে কাজ শিখে এসে নিজের কারখানা গড়েছি। এখন ৫০ জন লোক কাজ করে আমার কারখানায়। রেলের ইঞ্জিন বাদে প্রায় সব যন্ত্রাংশ তৈরি করতে পারি।"
বিসমিল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক আব্দুল মালেক বলেন,
"আমরা সরকারি টেন্ডারের কাজ করি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ডিজাইন অনুযায়ী পণ্য তৈরি করি।"
বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সৈয়দপুর শাখার সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু জানান,
"শহরে ২০০টির বেশি কারখানা আছে। কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বছরে ৩০০ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য হয়। সরকার যদি সুদমুক্ত ঋণ বা প্রণোদনা দেয়, তাহলে আরও বড় পরিসরে কাজ করা সম্ভব হবে।"
বিসিক (বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন) অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শহরে রেলওয়ে যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী ৫০টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সরকারি টেন্ডারভিত্তিক কাজ করে থাকে। এছাড়া রয়েছে অনেক অনিবন্ধিত ক্ষুদ্র কারখানা।