সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি নাইম হোসেনকে (২০) কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে র‍্যাব-১২ ও র‍্যাব-১১ এর যৌথ অভিযানিক দল কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার জিয়ারকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত নাইম হোসেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চর কামারখন্দ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে র‍্যাব-১২ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

র‍্যাব-১২এর উপ-অধিনায়ক মো. আহসান হাবিব জানান, ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর থেকেই প্রধান আসামি নাইম পলাতক ছিল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর কুমিল্লার তিতাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে র‍্যাব সদস্যরা তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরও বলেন, "আসামি গ্রেপ্তারের জন্য আমরা শুরু থেকেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।" গ্রেপ্তার নাইমকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

মামলার এজাহারের সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মাদরাসা ছাত্রী সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানাধীন কর্ণসুতী দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। গত রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে সে মাদরাসায় যায়। বিকেলে মাদরাসা ছুটি হলেও বাড়িতে ফিরে না এলে তার পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি পরিবারকে ফোন দিয়ে জানান যে, মেয়েটি সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। সংবাদ পেয়ে পরিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌঁছে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরে জানা যায়, মেয়েটি মাদরাসা থেকে কলম কেনার জন্য রাস্তা দিয়ে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় সিএনজি নিয়ে পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা কয়েকজন তার সামনে এসে দাঁড়ায়। তারা মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক তাকে সিএনজিতে তুলে নেয় এবং দ্রুতগতিতে জামতৈল রেলগেটের দিকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে উপজেলা সেন্ট্রাল পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে ডেরা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পূর্ব সাইডে প্রধান আসামি নাইম হোসেন তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় নাইমের সহযোগী বন্ধুরা রেস্টুরেন্টের ভেতরের গেটে পাহারা দেয় এবং কান্নাকাটি বাইরে থেকে কেউ যেন শুনতে না পারে সেজন্য উচ্চস্বরে গান বাজায়।

ধর্ষণ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান আসামি নাইম হোসেনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এই মামলার আইনি প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।