সিলেট বিভাগের রেলপথ সংস্কার ও আধুনিকায়নের দাবিতে আট দফা কর্মসূচি নিয়ে শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল থেকে অবরোধ শুরু করেছে স্থানীয় রেলযাত্রী ও নাগরিক কমিটির সদস্যরা। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধের কারণে সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি রেলস্টেশনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় এবং যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বিশেষ করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলস্টেশনে আন্দোলনকারীরা রেললাইনে বসে অবস্থান নেওয়ায় ঢাকাগামী ও সিলেটগামী একাধিক ট্রেন আটকা পড়ে। যাত্রীরা কেউ কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করছেন, কেউ আবার বিকল্প পথে যাত্রার চেষ্টা করছেন।

অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, বহু বছর ধরে সিলেট অঞ্চলের রেলসেবা অবহেলিত। জরাজীর্ণ রেললাইন, অনিয়মিত ট্রেন চলাচল ও শিডিউল বিপর্যয় এখন নিত্যদিনের ঘটনা। তারা বলেন, বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

তাদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আখাউড়া-সিলেট রেলপথের সংস্কার ও ডাবল লাইন নির্মাণ, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন চালু, বন্ধ স্টেশনগুলো পুনরায় চালু, কুলাউড়া জংশনে আসনসংখ্যা বৃদ্ধি, ট্রেনের যাত্রাবিরতি নীতিমালা পুনর্বিবেচনা এবং শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার।

ঢাকাগামী যাত্রী মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, দুপুর ১২টার ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সকাল থেকে ট্রেন বন্ধ। কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না কখন ছাড়বে।
আরেক যাত্রী সুলতানা পারভীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় প্রতিবারই কোনো না কোনো কারণে ট্রেন দেরি হয়। এবার আবার অবরোধে পুরো যাত্রাই অনিশ্চিত।

অন্যদিকে, সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের কালনী এক্সপ্রেস যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। তবে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস কিছুটা দেরিতে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, অবরোধ অন্য স্টেশনগুলোতে বেশি প্রভাব ফেলছে। দাবি আদায়ে আলোচনা চললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবির বিষয়ে নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।