পঞ্চগড় থেকে: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়সারাভাবে কাজ করছে। এতে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পুরোপুরি প্রতিফলিত না হয়ে সরকারের নিজেদের সুরক্ষার চিন্তাই বেশি প্রতিফলিত হচ্ছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত টুনিরহাট জুনিয়র ফুটবল একাডেমির গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, “আমাদের এনসিপির আহ্বায়ক আজ সকালে চার দফা দাবি নিয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং করেছেন, যা শুধু আমাদের নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই দাবিগুলো নিয়ে কাজ করার মানসিকতা ও মনোভাব দায়সারাভাবে দেখা যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ‘সেফ এক্সিট’ বলতে দেশ ছেড়ে পালানোর কথা বুঝি না। বরং আমরা চাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি যেন স্পষ্ট করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ক্ষমতায় এসে সেটিকে বাতিল করতে না পারে। কিন্তু এসব বিষয়ে এখনো কোন সুস্পষ্ট পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।”
এনসিপি নেতা অভিযোগ করেন, “ঘোষণাপত্রে শুধু নামের জন্যই জুলাই সনদের কথা উল্লেখ আছে, বাস্তবে কোনো কার্যকর অগ্রগতি নেই। এভাবে চলতে থাকলে যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তাদেরই ভবিষ্যতে রাষ্ট্রদ্রোহী বানানোর চেষ্টা হতে পারে।”
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের যথাযথ সম্মান না দেওয়ার প্রসঙ্গেও তিনি নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের মিলনমেলার মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যা ক্ষোভের কারণ হয়েছে। প্রশাসন বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং গ্রহণযোগ্য নয়।”
সরকারের এ ঘটনায় সংলাপের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা না করার দিকেও প্রশ্ন তুলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, “যদি তারা সত্যিই চাইত, সংলাপের মাধ্যমে বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেত। এখন প্রশ্ন উঠছে, এ ঘটনার দায় তারা কিভাবে নেবে?”
তিনি সরকারের দায়িত্বশীলতার অভাব এবং জনগণের নিরাপত্তার বদলে নিজেদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগও করেন। “তাদের একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকা, দেশের প্রকৃত সংস্কার নয়।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব ও ক্রীড়া বিভাগের সভাপতি তোফায়েল প্রধান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, বোদা টু-স্টার ফুটবল একাডেমির পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বিপুল, টুনিরহাট ফুটবল একাদশের সভাপতি নুর ইসলাম নুরু এবং সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল্লাহ প্রধান জুয়েল প্রমুখ।