বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার (১০ নভেম্বর) বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সাল হাসান আরিফ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আসন কমানোর সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন, সহযোগিতায় ছিলেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব কুমার পোদ্দার, ফয়সাল মোস্তফা, রাজিয়া সুলতানা, কাজী সামান্তা এনাম, আমিনুজ্জামান সোহাগসহ আরও কয়েকজন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইকরামুল কবির।
আদালতের রায়ের পর বাগেরহাটে শুরু হয় উল্লাস ও আনন্দমিছিল। শহরের প্রেসক্লাব, ফকিরহাট, চিতলমারী ও রামপাল এলাকায় বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব চত্বরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেন এবং জেলার বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
রিটকারী ব্যারিস্টার জাকির হোসেন বলেন, এ রায় বাগেরহাটের ১৮ লাখ মানুষের জয়। আদালত ন্যায়বিচার দিয়েছেন, যা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে।
বাগেরহাট জেলা বিএনপি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, হঠাৎ করে আমাদের চার আসনের একটি বাদ দেওয়ায় আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিলাম। অবশেষে আদালত জনগণের দাবি মেনে নিয়েছে। এখন আর কোনো শক্তি আমাদের আসন কেড়ে নিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। এর বিরোধিতা করে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন আন্দোলনে নামে। ৪ সেপ্টেম্বর ইসি তিন আসনের গেজেট প্রকাশ করলে জেলার আইনজীবী সমিতি, প্রেসক্লাব, বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ট্রাক মালিক সমিতি যৌথভাবে রিট দায়ের করে।
দীর্ঘ শুনানির পর আদালত আজ রায় দেন, যা বাগেরহাটের রাজনৈতিক অঙ্গনে উচ্ছ্বাসের সঞ্চার করেছে।